চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের নারী চরিত্র

দেব খণ্ড

১] চণ্ডী : দেবী চণ্ডীকে এই কাব্যে তিনরূপে দেখতে পাই – সতী, পার্বতী এবং দেবী চণ্ডিকা। কালকেতু আখ্যানে দেবী চণ্ডীর গোধিকারূপ ধারন ও ধন প্রদানের ঘটনা অনেকের জানা।
 
২] ছায়া : নীলাম্বর পত্নী, মর্ত্যে ফুল্লরা রূপে জন্ম নিয়েছে।
 
৩] গঙ্গা : দেবী চণ্ডীর সতীন রূপে অঙ্কিত।
 

আখেটিক খণ্ড

১] ফুল্লরা : কালকেতু উপাখ্যানের প্রধান নারী চরিত্র। ব্যাধ কালকেতুর স্ত্রী সে। উপাখ্যানের সবথেকে জীবন্ত চরিত্র।
 
২] নিদয়া : কালকেতুর মা, ধর্মকেতুর পত্নী। নিদয়াই ফুল্লরাকে পছন্দ করে নিজ পুত্রের সঙ্গে বিবাহ দিয়েছে।
 
৩] মুরারির স্ত্রী : মহাজন মুরারির এই স্ত্রীটি বেশ চতুরা এমনকি দুষ্টবুদ্ধিসম্পন্না।
 

বণিক খণ্ড

১] লহনা : ধনপতি উপাখ্যানের অন্যতম একটি চরিত্র। বণিক ধনপতির প্রথমা পত্নী সে। লহনা সন্তানহীনা আর সেকারনে নবযৌবনা সতিন খুল্লনার প্রতি সে রুষ্ট।
 
২] খুল্লনা : খুল্লনা ধনপতির দ্বিতীয়া স্ত্রী। লহনা ও খুল্লনা পরস্পর খুড়তুতো বোন। সে এই আখ্যানের প্রধান নারী চরিত্র। শ্রীমন্তের মাতা হিসাবে তার কৃতিত্ব প্রকাশিত।
 
৩] দুর্বলা : একজন দাসী, ধনপতির প্রথমা পত্নী লহনার বিশ্বস্ত দাসী, পরামর্শদাত্রী। সময় ও সুযোগের সৎ ব্যবহারে সে পারদর্শিনী। কেননা ধনপতির অবর্তমানে সে যেমন লহনাকে কুপরামর্শ দিয়েছে তেমনি শ্রীমন্তের জন্মে নেচে গেয়ে শিশু শ্রীমন্তকে খুশি করেছে।
 
৪] লীলাবতী : লহনাদের প্রতিবেশিনী। কুচুটে স্বভাবের মহিলা। খুল্লনাকে বিপদে ফেলতে লহনাকে সমস্তরকমের সাহায্য করেছে সে।
 
৫] সুশীলা : শালবাহন রাজার কন্যা। শ্রীমন্তের পত্নী।
আরো পড়ুন :  মুসলমান বৈষ্ণব কবি আলি রাজার 13টি বৈষ্ণব পদ

 

 

 

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের পুরুষ চরিত্র।

দেব খণ্ড

১] শিব : দেবখণ্ডের প্রধান পুরুষ চরিত্র। শিব চরিত্রের দুটি দিক রয়েছে। এক পৌরাণিক শিব,  দুই দরিদ্র-বয়স্ক ভিখারি শিব।
 
২] দক্ষ : সতীর পিতা দক্ষ, কাহিনি পুরাণ অনুসারী।
 
৩] নীলাম্বর : নীলাম্বর ইন্দ্রপুত্র। মর্ত্যে কালকেতু হয়ে জন্ম নিয়েছে।
 

আখেটিক খণ্ড

১] কালকেতু : মহাবীর কালকেতু আখেটিক খণ্ডের প্রধান পুরুষ চরিত্র। বলিষ্ঠ এই বীর আসলে স্বল্পবুদ্ধির মানুষ। দেবীর সহায়তাতেই তার রাজ্যপ্রাপ্তি।
 
২] ধর্মকেতু : ইনি কালকেতুর পিতা। বৃদ্ধ বয়সে পত্নী নিদয়াকে নিয়ে কাশীবাসী হয়েছে।
 
৩] মুরারি শীল : এককথায় মুরারিশীল সুদের কারবারি। দেবীর দেওয়া আংটির মূল্য নির্ধারনের সময় আংটিটিকে পিতলের বলে হাতিয়ে নেওয়ার ধান্দা তার। সে আসলে খল -চতুর।
 
৪] বুলান মণ্ডল : গুজরাট নগরের লোকেদের প্রতিনিধি সে। নতুন রাজা কালকেতুর কাছে সে সম্মান পায়। সে কলিঙ্গের চাষি প্রজাদের নেতৃস্থানীয়।
 
৫] ভাঁড়ু দত্ত : এটি একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র। কালকেতুকে বিপদে ফেলতে কলিঙ্গরাজের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল।
 
৬] কলিঙ্গরাজ : কালকেতু গুজরাট রাজ্য পত্তন করলে পাশের রাজ্য কলিঙ্গের রাজা গুজরাট আক্রমণ করে।
 
 
—————————————————–
—————————————————–

 

বণিক খণ্ড

১] ধনপতি : একজন সম্ভ্রান্ত বণিক। চাঁদ সদাগরের মতো বলিষ্ঠতা এর চরিত্রে নেই।
 
২] শ্রীমন্ত / শ্রীপতি : ধনপতির পুত্র। ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যাবে, সে দেবী চণ্ডীর বরপুত্র। সবক্ষেত্রেই শ্রীমন্ত দেবীর সহায়তা পেয়েছে।
 
এছাড়া সিংহলদেশের রাজা,  বাণিজ্যযাত্রার মাঝি-মাল্লারা ইত্যাদি।
 

 

আরো পড়ুন :  বাংলায় কৃষ্ণকথার সূত্র, গাথাসপ্তশতী ও প্রাকৃত পৈঙ্গল
 

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *