সময়কাল
শান্তিপাদ প্রাচীন সিদ্ধাচার্য। ডঃ সুকুমার সেনও শাস্তিপাদকে প্রাচীন চর্যাকার বলিয়া স্বীকার করেছেন। তাঞ্জুর তালিকা মতে ‘রত্নাকর শান্তি’ই শান্তিপাদ। তারানাথের বিবরণ অনুসারে রত্নাকর শাস্তি শবরীপাদের সমসাময়িক। সেই হিসেবে শান্তিপাদের সময় দাঁড়ায় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যভাগ।
[ads id=”ads1″]
অন্যান্য রচনা
তিব্বতী তালিকায় রত্নাকারশান্তি ‘আচার্য, ‘আচার্যপাদ’, ‘মহাপণ্ডিত’ বলে অভিহিত হয়েছেন। রত্নাকর শাস্তির তাঞ্জুর তালিকায় অনেকগুলি গ্রন্থের উল্লেখ দেখা যায়। যে দুইটি তন্ত্র –হেবজ্র ও গুহ্যসমাজতন্ত্র সাধনার ভিত্তি, রত্নাকর শান্তি সেই দুটি তন্ত্রের উপরই টীকা রচনা করেছেন—‘মুক্তাবলী নামি হেবজ্র পঞ্জিকা’ এবং ‘কুসুমাঞ্জলি নাম গুহ্যসমাজ নিবন্ধ’ । এগুলি ছাড়াও তিনি বজ্রতারা, মহামায়াসাধন প্রকাশ করেন। তাঁর অপর বিশিষ্ট গ্রন্থ হলো ‘সুখদুঃখদ্বয় পরিত্যাগ দৃষ্টি’। ‘সহজরতিসংযােগ’ ও ‘সহজ যােগক্রম’ —গ্রন্থ দুটি সহজযানের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যােগের স্বাক্ষর বহন করে।
আলোচনা
শান্তিপাদের নামে দুটি চর্যাগান (১৫, ২৬) পাওয়া যায়–
- সঅ সম্বেঅণ সরুঅ বিআরেঁতে অলক্খ লক্খণ ন জাই [১৫]
- তুলা ধুণি ধুণি আঁসু রে আঁসু । আঁসু ধুণি ধুণি ণিরবর সেসু [২৬]
উভয় গানেই ‘সম সংবেঅণ’ -এর প্রসঙ্গ আছে। দুটি গানেই ‘জ্ঞানানন্দ প্রমােদভর’ সিদ্ধ আচার্যের জ্ঞানদৃষ্টির পরিচয় মেলে। ২৬ সংখ্যক গানে মাধ্যমিক শূন্যবাদের প্রভাব অতি স্পষ্ট। শান্তিদেব যে ভাবে বিজ্ঞানবাদের মত খণ্ডন করে শূন্যবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন, শান্তিপাদও তুলা-ধুননের রূপকে ঠিক সেই ভাবেই বিজ্ঞানবাদ খণ্ডন করে শূন্যবাদের স্বসংবেদন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
[ads id=”ads2″]
তবে শান্তিদেব ও শান্তিপাদ কখনই এক ব্যক্তি নন। চর্যার শাস্তিপাদ রত্নাকর শান্তি–সহজযােগের উপর যিনি পুথি রচনা করেছেন। শান্তিপাদের গানে সিদ্ধাচার্যের জ্ঞান দৃষ্টির কবিদৃষ্টি ও সূক্ষ্ম বস্তুদৃষ্টির পরিচয় মেলে।