প্রাচ্য পণ্ডিতগণ

অভিনব গুপ্ত :
জন্ম কাশ্মীরে দশম খ্রিস্টাব্দে। কাব্যতত্ত্ব, অলংকারে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। ‘ধ্বন্যালোক’ও ‘নাট্যশাস্ত্রে’র 
টীকা-ভাষ্য রচনা করেছিলেন। প্রথমটির ভাষ্য লোচনটীকা এবং দ্বিতীয়টির ভাষ্য অভিনবভারতী নামে পরিচিত। রসতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর ‘অভিব্যক্তিবাদ’ ধারনা পরবর্তীদের অনেক প্রভাবিত করেছিল।     
অমরসিংহ :
প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত কোশগ্রন্থ রচয়িতা। জন্মকাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতক। তিনি ছিলেন বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। বিখ্যাত ‘অমরকোষ’ বা ‘অমরার্থচন্দ্রিকা’ -র রচয়িতা ইনি। কেউ কেউ বলেন রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার অন্যতম নবরত্ন ছিলেন।  
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৮৮৯-১৯৭৭) :
ভারতের শ্রেষ্ঠ ভাষাবিজ্ঞানী। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর গবেষণার ফল হিসেবে প্রকাশিত The Origin and Devolopment of The Bengali Language আজও একটি মহাগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়া আরো কয়েকটি ইংরেজি গ্রন্থ হলো – Indo-Aryan and Hindi, A Brief Sketch of Bengali Phonetics, A Bengali Phonetic Reader, Bengali Self-taught প্রভৃতি। আর বাংলা গ্রন্থের মধ্যে – ‘ভাষাপ্রকাশ বাঙ্গালা ব্যকরণ’, ‘বাঙ্গালা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা’, ‘বাঙলা ভাষা প্রসঙ্গে’, ‘সাংস্কৃতিকী’,  ‘ভারতের ভাষা ও ভাষাসমস্যা’ প্রভৃতি তাঁর শ্রেষ্ঠতার নিদর্শন। জ্ঞানচর্চার ব্যপকতায়, গভীরতায় শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে তিনি স্মরণীয়।                        

পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ  

অ্যারিস্টটল Aristotle [384-322 BC]
বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক, প্লেটোর শিষ্য। তিনি ৩৩৫ খ্রি:পূ: অ্যাথেন্স -এ ‘লিসিয়ুম’ নামে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যুক্তিবিদ্যা, অলংকারশাস্ত্র, কাব্যতত্ত্ব প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর রচনা অশেষ মূল্যবান।         
মাইকেল হ্যালিডে, Michael Alexander Kirkwood Halliday [1925]
ইংরেজ ভাষাবিজ্ঞানী। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অধ্যাপনা করেন। চৈনিক ভাষার বিশেষজ্ঞ। সংগঠনবাদের বিরোধিতা করেন তিনি। হ্যালিডে Systemic Grammar এর উদ্ভাবক। অর্থ বা বাগর্থ তাঁর বিবেচনায় একটি ‘নির্বাচন’। syntagm -এর পরিবর্তে paradigm-এর গুরুত্ব তাঁর কাছে বেশি। তিনি তাঁর শিক্ষক জন রুপার্ট ফার্থের অনুগামী বলে তাঁকে কেউ কেউ Neo-Firthian   বলেছেন।      

চার্লস অগডেন Charles Kay Ogden (১৮৮৯-১৯৫৭)

Basic english  ধারণাটির জন্য ইনি বিখ্যাত। ১৯৩০ সালে ইনি এই ধারনাটির উদ্ভাবন ঘটান। আসলে basic হলো একটি শীর্ষক শব্দ। সম্পূর্ণ কথাটি হলো ‘British American Scientific International Commercial’. এতে আছে ৮৫০টি শব্দ— ৪০০টি বিশেষ্য, ২০০টি শব্দচিত্র, ১০০টি গুনবাচক শব্দ, ৫০টি বিপরীতার্থক শব্দ এবং ১০০টি অন্যান্য শব্দ। একসময় বিখ্যাত Cambridge Magazine এবং পরে Psyche নামে বিখ্যাত পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন ইনি।     

জর্জ অরওয়েল George Orwell ১৯০৩-৫০

বিশিষ্ট ইংরেজ ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। জন্ম হয়েছিল ভারতে, ভারত ছিল পিতার কর্মস্থল। ইংরেজি ভাষার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছেন তিনি। তাঁর একটি বিখ্যাত রচনা হলো – Politics and the English Language. এই লেখায় তিনি  সংবাদপত্রে ও রাজনীতিবিদদের রচনায় ইংরেজি ভাষার অপপ্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

জর্জ উডনি ইয়ুল George Udny Yule [1871-1951]

ইংরেজ রাশিবিজ্ঞানী। কেম্ব্রিজের অধ্যাপক। তিনি ভাষাবিজ্ঞানে পরিসংখ্যান বিদ্যার প্রয়োগ করেছিলেন।

রোমান জ্যাকবসন Roman Jakobson [1896-1982]

বিখ্যাত রুশ ভাষাবিজ্ঞানী। সাহিত্যশৈলীকে ভাষাবিজ্ঞানের আলোকে  বিচার ও বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান কম নয়। ভাষার সঙ্গে চিহ্নতত্ত্বের সংযোগ ও সম্পর্ক তাঁর গবেষণার অন্যতম বিষয়।            

[ক্রমশ প্রকাশ্য]                  

আরো পড়ুন :  প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম, বাংলা একাডেমি, ঢাকা