|

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য : প্রবাদ-প্রবচন

প্রাচীন সাহিত্যের প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহারের উল্লেখ করতে গিয়ে সুশীলকুমার দে জানিয়েছেন, প্রাচীন সাহিত্যের প্রবাদের যে যথেষ্ঠ প্রয়োগ রহিয়াছে, তাহার সযত্ন ও সবিস্তার আলোচনা না হইলে, এগুলির লোকপ্রিয়তা, ব্যবহারের পারম্পর্য ও প্রাচীন রূপ নির্ণয় করা যাইবে না। [বাংলাপ্রবাদ] ** প্রবাদের প্রাচীনতা নির্ণয় করতে গেলে এগুলির রূপ ও প্রয়োগের বিচিত্র রূপান্তর লক্ষ করা যায়। এব্যাপারে ১টি উদাহরণ উল্লিখিত হলো— অপণা মাংসেঁ হরিণা…

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ১. অনন্ত বৈষ্ণব পদকর্তাদের মধ্যে ‘অনন্ত’ নামে অন্ততঃ দুজন কবি ছিলেন। দুজনেই ছিলেন অদ্বৈত আচার্যের শিষ্য। একজন অনন্ত আচার্য। অন্যজন অনন্ত দাস। এঁদের মধ্যে অনন্ত দাসই শ্রেষ্ঠ। বাংলা ও ব্রজবুলি উভয় ভাষাতেই অনন্ত দাসের রচনা সুখপাঠ্য। ২. উদ্ধব দাস উদ্ধবদাসের প্রকৃত নাম কৃষ্ণকান্ত মজুমদার। টেঙা বৈদ্যপুর তাঁর নিবাসস্থল। ইনি ছিলেন শ্রীনিবাস আচার্যের প্রপৌত্র…

ধর্মমঙ্গল কাব্যের চরিত্র পরিচিতি

নারী চরিত্র ১. রঞ্জাবতী : রঞ্জাবতী ধর্মমঙ্গল কাব্যের প্রধান নারী চরিত্র। বৃদ্ধ রাজা কর্ণসেনের সঙ্গে রঞ্জাবতীর বিবাহ হয়েছিল। রঞ্জাবতীর পতিভক্তি বা দেবভক্তি মধ্যযুগের আরো পাঁচটি নারীচরিত্রের সমতুল্য। পুত্র কামনায় রঞ্জাবতী কঠোর সাধনা করেছে। দেবতার বরে রঞ্জাবতীর গর্ভে লাউসেনের জন্ম হয়েছে। রঞ্জাবতী সবসময় পুত্র লাউসেনকে মাতুল মাহুদ্যার হাত থেকে অতি যত্নে বাঁচিয়ে রেখেছিল। ২. দুর্গা :…

বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থ

১. শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ রসকল্পবল্লী – রামগোপাল দাস ২. ক্ষণদাগীতচিন্তামণি – বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ৩. গীতচন্দ্রোদয় – নরহরি চক্রবর্তী ৪. পদামৃত সমুদ্র – রাধামোহন ঠাকুর ৫. পদকল্পতরু – বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) ৬. রসনির্যাস – বৃন্দাবন দাস ৭. কীর্তনানন্দ – গৌরসুন্দর দাস ৮. সংকীর্তনামৃত -দীনবন্ধু দাস ৯. নায়িকারত্নমালা – চন্দ্রশেখর-শশিশেখর ১০. পদরসসাস – নিমানন্দ দাস ১১. পদরত্নাকর –…

বাংলায় কৃষ্ণকথার সূত্র, গাথাসপ্তশতী ও প্রাকৃত পৈঙ্গল

প্রাকৃত-অপভ্রংশ সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের সম্পর্ক যে ঘনিষ্ঠ তার প্রমাণ কয়েকটি প্রাকৃত-অপভ্রংশ গ্রন্থ আলােচনা করলে পাওয়া যায়। অবশ্য নিশ্চিত ভাবে বাংলাদেশে রচিত হয়েছে এমন প্রাকৃত অপভ্রংশ গ্রন্থ হয়তো পাওয়া যাবে না। বিশেষতঃ গাথা-সপ্তশতী ও প্রাকৃতপৈঙ্গল বাংলাদেশের সংকলনই নয়। কিন্তু বাঙালি জীবনের অনুরূপ চিত্রে, উত্তরকালীন বাংলা সাহিত্যের বিশেষতঃ বাংলা সাহিত্যে বাহিত কৃষ্ণকথার সাধর্মে সংকলন দুটি খুবই…

বৈষ্ণব সাহিত্যে অষ্টকালীন নিত্যলীলা, প্রীতম চক্রবর্তী

বৈষ্ণব ধর্মে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহের জন্য বৈষ্ণব মহান্তগণ সেবক ভক্তদের কিছু রীতি-নীতি বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই নিয়মগুলোকে কাব্যরসে মন্ডিত করার জন্য কবি গোবিন্দদদাস “অষ্টকালীয় লীলাবর্ণন” করেছিলেন। ৫১ টি পদ বিশিষ্ট এই কাব্যখানিকেই “বৈষ্ণবীয় অষ্টকালীন নিত্যলীলা” বলা হয়েছে। বৈষ্ণবদের ধারণা অপ্রাকৃত বৃন্দাবনে নিত্যকিশোর কৃষ্ণ শ্রীরাধার সঙ্গে নিত্যলীলায় মগ্ন হয়ে আছেন। সমস্ত দিন রাত্রির ২৪ ঘন্টাকে ৮টি প্রহরে ভাগ…

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের চরিত্র পরিচিতি

চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের চরিত্র পরিচিতি

        চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের নারী চরিত্র দেব খণ্ড ১] চণ্ডী : দেবী চণ্ডীকে এই কাব্যে তিনরূপে দেখতে পাই – সতী, পার্বতী এবং দেবী চণ্ডিকা। কালকেতু আখ্যানে দেবী চণ্ডীর গোধিকারূপ ধারন ও ধন প্রদানের ঘটনা অনেকের জানা।   ২] ছায়া : নীলাম্বর পত্নী, মর্ত্যে ফুল্লরা রূপে জন্ম নিয়েছে।   ৩] গঙ্গা : দেবী চণ্ডীর…

মনসামঙ্গল কাব্যের চরিত্র-পরিচিতি

মনসামঙ্গল কাব্যের নারী চরিত্র মনসা : এইকাব্যের মূল দেবী, শিব-কন্যা। চাঁদ সদাগরকে তার পুজো প্রচারে বাধ্য করেছে। বেহুলা : সবথেকে উল্লেখযোগ্য চরিত্র, পৌরাণিক সাবিত্রী চরিত্রের অনুকরণে বেহুলা চরিত্র অঙ্কিত। নেত/নেতা : মনসার সঙ্গী ও পরামর্শদাত্রী। মনসামঙ্গল কাব্যের উপেক্ষিত চরিত্র। সনকা : চাঁদ সদাগরের স্ত্রী, লখীন্দরের মাতা। মনসাভক্ত, আমাদের পরিচিত গৃহিণী চরিত্রের মতো। চণ্ডী : দেবখণ্ডের…

শিক্ষাষ্টক / শিক্ষাশ্লোকাষ্টক [শ্রীচৈতন্যদেব]

শিক্ষাষ্টক / শিক্ষাশ্লোকাষ্টক [শ্রীচৈতন্যদেব]

        শিক্ষাষ্টক / শিক্ষাশ্লোকাষ্টক [শ্রীচৈতন্যদেব]     মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের একমাত্র রচনা নিদর্শন বলে কথিত ‘শিক্ষাষ্টক’ [শিক্ষাশ্লোকাষ্টক] -এর শ্লোকগুলি কবিরাজ কৃষ্ণদাস গোস্বামী তাঁর “শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত” গ্রন্থের অন্তলীলার বিংশ পরিচ্ছেদে বঙ্গানুবাদ সহ উদ্ধৃত করেছেন। মূল শ্লোকগুলি কবিরাজ গোস্বামী শ্রীরূপগোস্বামীর সংকলন গ্রন্থ “পদ্যাবলী” থেকে গ্রহণ করেছেন।   কৃষ্ণদাস কবিরাজ-এর মতে লীলাজীবনের শেষের দিকে শ্রীচৈতন্যদেব লোকশিক্ষা দিতে…