| |

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য : প্রবাদ-প্রবচন

প্রাচীন সাহিত্যের প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহারের উল্লেখ করতে গিয়ে সুশীলকুমার দে জানিয়েছেন, প্রাচীন সাহিত্যের প্রবাদের যে যথেষ্ঠ প্রয়োগ রহিয়াছে, তাহার সযত্ন ও সবিস্তার আলোচনা না হইলে, এগুলির লোকপ্রিয়তা, ব্যবহারের পারম্পর্য ও প্রাচীন রূপ নির্ণয় করা যাইবে না। [বাংলাপ্রবাদ] ** প্রবাদের প্রাচীনতা নির্ণয় করতে গেলে এগুলির রূপ ও প্রয়োগের বিচিত্র রূপান্তর লক্ষ করা যায়। এব্যাপারে ১টি উদাহরণ উল্লিখিত হলো— অপণা মাংসেঁ হরিণা…

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৫ম পর্ব

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৫ম পর্ব

৪১. রামানন্দ বসু   বর্ধমানের অন্তর্গত কুলীনগ্রামের মালাধর বসুর বংশজ (পৌত্র?) রামানন্দ বসু গৌরাঙ্গ পরিজন ছিলেন। প্রতি রথবাত্রার সময় কুলীন গ্রামের ভক্তদের নিয়ে রামানন্দ নীলাচলে যেতেন ও মহাপ্রভুর সান্নিধ্য লাভ করতেন। বসু রামানন্দের ভণিতায় বাংলা ও ব্রজবুলি পদগুলি উৎকৃষ্ট। চৈতন্যপ্রসাদবঞ্চিত রামানন্দ দাস নামে আর একজন পদকর্তার পদ রামানন্দ ভণিতায় পাওয়া যায়। ইনি চৈতন্যোত্তর যুগের কবি।…

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৪র্থ পর্ব

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৪র্থ পর্ব

          ৩১. বৃন্দাবন দাস   শ্রীচৈতন্যের অনুচর শ্রীবাসের ভ্রাতুষ্পুত্রী নারায়ণীর পুত্র বৃন্দাবন দাসের পিতৃপরিচয় অজ্ঞাত। আনুমানিক ১৫২০-২২ খ্রিস্টাব্দে কবির জন্ম। নবদ্বীপের নিকটবর্তী মামগাছি গ্রামের তাঁর প্রথমজীবন কাটে। শেষজীবনে তিনি বর্ধমানের দেনুড় গ্রামে থাকেন। চৈতন্যের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে না এলেও কবি নিত্যানন্দের ঘনিষ্ঠশিষ্য ছিলেন। আঃ ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দে সুবিখ্যাত ‘চৈতন্যভাগবত’ রচনা করেন। খেতুরী উৎসবকালে…

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৩য় পর্ব

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ৩য় পর্ব

            ২১. নরহরি (সরকার)   পদাবলি সাহিত্যে নরহরি প্রধানত দুজন। একজন ষোড়শ শতকের নরহরি সরকার। শ্রীখণ্ডের বৈদ্যবংশে এঁর জন্ম। পিতার নাম নরনারায়ণ দেব ; মাতার নাম গৌরীদেবী। বয়সে গৌরাঙ্গের চেয়ে চার-পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। ছাত্রাবস্থা থেকে নিমাই-এর সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। পরে গৌরাঙ্গের একান্ত ভক্ত হন এবং নবদ্বীপ নীলার অন্তরঙ্গ পরিকর…

| | |

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ২য় পর্ব

১১. গোবিন্দদাস চক্রবর্তী শ্রীনিবাস আচার্যের শিয্য। বোরাকুলি গ্রামে নিবাস।পত্নীর নাম সুচরিতা, পুত্রের নাম মাধবেন্দ্র। কবিত্ব ও কীর্তনে বিশেষতঃ ভক্তিতে দশা প্রাপ্তির জন্য তিনি ‘ভাবক চক্রবর্তী’ নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। ১২. গোবিন্দদাস কবিরাজ চৈতন্য তিরোধানের চারবছর পর ১৫৩৭ খ্রি. গোবিন্দদাস কবিরাজের জন্ম ; পিতা চৈতন্য-পরিকর চিরঞ্জীব। মাতার নাম সুনন্দা। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রামচন্দ্র কবিরাজ। প্রথম জীবনে মাতামহ দামোদরের…

| | |

বৈষ্ণব কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়, ১ম পর্ব

১. অনন্ত বৈষ্ণব পদকর্তাদের মধ্যে ‘অনন্ত’ নামে অন্ততঃ দুজন কবি ছিলেন। দুজনেই ছিলেন অদ্বৈত আচার্যের শিষ্য। একজন অনন্ত আচার্য। অন্যজন অনন্ত দাস। এঁদের মধ্যে অনন্ত দাসই শ্রেষ্ঠ। বাংলা ও ব্রজবুলি উভয় ভাষাতেই অনন্ত দাসের রচনা সুখপাঠ্য। ২. উদ্ধব দাস উদ্ধবদাসের প্রকৃত নাম কৃষ্ণকান্ত মজুমদার। টেঙা বৈদ্যপুর তাঁর নিবাসস্থল। ইনি ছিলেন শ্রীনিবাস আচার্যের প্রপৌত্র রাধামোহন ঠাকুরের শিষ্য। তিনি…

|

ধর্মমঙ্গল কাব্যের চরিত্র পরিচিতি

নারী চরিত্র ১. রঞ্জাবতী : রঞ্জাবতী ধর্মমঙ্গল কাব্যের প্রধান নারী চরিত্র। বৃদ্ধ রাজা কর্ণসেনের সঙ্গে রঞ্জাবতীর বিবাহ হয়েছিল। রঞ্জাবতীর পতিভক্তি বা দেবভক্তি মধ্যযুগের আরো পাঁচটি নারীচরিত্রের সমতুল্য। পুত্র কামনায় রঞ্জাবতী কঠোর সাধনা করেছে। দেবতার বরে রঞ্জাবতীর গর্ভে লাউসেনের জন্ম হয়েছে। রঞ্জাবতী সবসময় পুত্র লাউসেনকে মাতুল মাহুদ্যার হাত থেকে অতি যত্নে বাঁচিয়ে রেখেছিল। ২. দুর্গা :…

|

বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থ

১. শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ রসকল্পবল্লী – রামগোপাল দাস ২. ক্ষণদাগীতচিন্তামণি – বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ৩. গীতচন্দ্রোদয় – নরহরি চক্রবর্তী ৪. পদামৃত সমুদ্র – রাধামোহন ঠাকুর ৫. পদকল্পতরু – বৈষ্ণবদাস (গোকুলানন্দ সেন) ৬. রসনির্যাস – বৃন্দাবন দাস ৭. কীর্তনানন্দ – গৌরসুন্দর দাস ৮. সংকীর্তনামৃত -দীনবন্ধু দাস ৯. নায়িকারত্নমালা – চন্দ্রশেখর-শশিশেখর ১০. পদরসসাস – নিমানন্দ দাস ১১. পদরত্নাকর –…

| |

বাংলায় কৃষ্ণকথার সূত্র, গাথাসপ্তশতী ও প্রাকৃত পৈঙ্গল

প্রাকৃত-অপভ্রংশ সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের সম্পর্ক যে ঘনিষ্ঠ তার প্রমাণ কয়েকটি প্রাকৃত-অপভ্রংশ গ্রন্থ আলােচনা করলে পাওয়া যায়। অবশ্য নিশ্চিত ভাবে বাংলাদেশে রচিত হয়েছে এমন প্রাকৃত অপভ্রংশ গ্রন্থ হয়তো পাওয়া যাবে না। বিশেষতঃ গাথা-সপ্তশতী ও প্রাকৃতপৈঙ্গল বাংলাদেশের সংকলনই নয়। কিন্তু বাঙালি জীবনের অনুরূপ চিত্রে, উত্তরকালীন বাংলা সাহিত্যের বিশেষতঃ বাংলা সাহিত্যে বাহিত কৃষ্ণকথার সাধর্মে সংকলন দুটি খুবই…

| | |

বৈষ্ণব সাহিত্যে অষ্টকালীন নিত্যলীলা — প্রীতম চক্রবর্তী

বৈষ্ণব ধর্মে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহের জন্য বৈষ্ণব মহান্তগণ সেবক ভক্তদের কিছু রীতি-নীতি বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই নিয়মগুলোকে কাব্যরসে মন্ডিত করার জন্য কবি গোবিন্দদদাস “অষ্টকালীয় লীলাবর্ণন” করেছিলেন। ৫১ টি পদ বিশিষ্ট এই কাব্যখানিকেই “বৈষ্ণবীয় অষ্টকালীন নিত্যলীলা” বলা হয়েছে। বৈষ্ণবদের ধারণা অপ্রাকৃত বৃন্দাবনে নিত্যকিশোর কৃষ্ণ শ্রীরাধার সঙ্গে নিত্যলীলায় মগ্ন হয়ে আছেন। সমস্ত দিন রাত্রির ২৪ ঘন্টাকে ৮টি প্রহরে ভাগ…